উইকিভ্রমণ থেকে

রাঙ্গামাটি সদর বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

জানুন[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পূর্বে ২২°৩০´ থেকে ২২°৪৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৪´ থেকে ৯২°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার আয়তন ৫৪৬.৪৯ বর্গ কিলোমিটার। ১৯২৩ সালে রাঙ্গামাটি কোতোয়ালী থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার জনসংখ্যা ১,২৪,৭২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৬,২১২ জন এবং মহিলা ৫৮,৫১৬ জন। মোট জনসংখ্যার ৪০% মুসলিম, ১২.২৫% হিন্দু, ৪৬.৫৫% বৌদ্ধ এবং ১.২% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, খুমি, চাক, লুসাই, পাংখোয়া প্রভৃতি উপজাতি নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

কীভাবে যাবেন[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিতে বাস যোগে আসা যায়। রাঙ্গামাটিতে যাওয়ার সরাসরি দুইটি বাস আছে। একটি হলো পাহাড়িকা যা চট্টগ্রাম থেকে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং রাঙ্গামাটি হতে সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলাচল করে। এই বাস সার্ভিসটি প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর অন্তর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় নেয়। পাহাড়িকা বাস সার্ভিসের টিকিটের মূল্য ১৫০ টাকা এবং টিকিট মুরাদপুর ও অক্সিজেন মোড় থেকে সংগ্রহ করা যায়। আরেকটি বাস সার্ভিস হচ্ছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস, যা রাঙ্গামাটির একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস। এই বাসের টিকিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং টিকিট চট্টগ্রামস্থ বটতলী রেলওয়ে স্টেশনের বিআরটিসি কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া অনেক ধরনের লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে সেসব বাস সার্ভিস রাস্তার যেকোন জায়গা থেকে যাত্রী উঠানামা করায়, ফলে বাসে সবসময় যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে এবং গন্তব্যে ৪-৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। রাজধানী ঢাকা থেকেও রাঙ্গামাটি যাওয়ার কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। এই বাস সার্ভিসগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। এছাড়াও আশেপাশের জেলাগুলোতেও কিছু লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে রাঙ্গামাটিতে আসা যাওয়ার জন্য।

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

মানচিত্র
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার মানচিত্র
  • কাপ্তাই হ্রদবাংলাদেশের বৃহত্তম কৃত্রিম এ হ্রদ রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি, লংগদু ও নানিয়ারচর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত। উইকিপিডিয়ায় কাপ্তাই হ্রদ
  • পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতুরাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়ি হয়ে সড়ক পথে সরাসরি পর্যটন কমপ্লেক্সে যাওয়া যায়।
  • যমচুগরাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে দেশীয় ইঞ্জিন বোটে খারিক্ষ্যং, ত্রিপুরাছড়া এবং মাচ্চ্যাপাড়া হয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে যমচুগ এলাকা যাওয়া যায়। এ এলাকাটি থেকে পুরো বন্দুকভাঙ্গা এলাকা অবলোকন করা যায়।
  • আসামবস্তি ব্রীজপুরাতন বাস স্টেশন শাপলা চত্বর থেকে টেক্সি রিজার্ভ করে আসামবস্তি ব্রীজে যাওয়া যায়।
  • বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি ভাস্কর্যচট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক সংলগ্ন সাপছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত। সদর উপজেলা থেকে অটোরিক্সা এবং চট্টগ্রামগামী বিভিন্ন যানের মাধ্যমে এ স্থানে যাওয়া যায়।
  • উপজাতীয় জাদুঘরযাদুঘরটি সকলের জন্য উম্মুক্ত। রাঙ্গামাটি শহরের প্রবেশ দ্বারে সহজেই দৃষ্টি কাড়ে যে স্থাপত্যটি সেটিই উপজাতীয় যাদুঘর। ১৯৭৮ সালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠালগ্নে এ অঞ্চলের বিভিন্ন জাতিসত্তার নৃতাত্ত্বিক নিদর্শন সামগ্রী নিয়ে সীমিত পরিসরে এ যাদুঘরের যাত্রা শুরু হয়। ২০০৩ সালে নতুন ভবন নির্মিত হলে তা আরও সমৃদ্ধ হয়। এ যাদুঘরে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্যবাহী অলংকার, পোষাক-পরিচ্ছদ, বাদ্যযন্ত্র, ব্যবহার্য তৈজষপত্র, অস্ত্র-শস্ত্র, প্রাচীন মুদ্রা, প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থ, পুঁথিপত্র, তৈলচিত্র ও উপজাতীয় জীবনধারার বিভিন্ন আলোকচিত্র রয়েছে। এসব সংগ্রহ দেখে জাতিসত্তাসমূহের জীবনাচার, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা যায়।
  • জেলা প্রশাসক বাংলোরাঙ্গামাটি শহরের যে কোন স্থান থেকে অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়। ভাড়ার পরিমাণ ১০০-১৫০ টাকা। তবে বাংলো এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুমতি আবশ্যক।
  • জীবতলী ইউনিয়নের প্রবেশ মুখরাঙ্গামাটি সদর উপজেলা থেকে সড়ক পথে তবলছড়ির আসামবস্তি হয়ে জীবতলী ইউনিয়নে যেতে হয়। এছাড়া নদীপথেও জীবতলী যাওয়া যায়।
  • পেদা টিং টিংকাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত ভাসমান পাহাড়ে অবস্থিত পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র। পেদা টিং টিং চাকমা শব্দগুচ্ছ। এর ভাবগত অর্থ হচ্ছে - পেট টান টান। অর্থাৎ, মারাত্মকভাবে খাবার পর পেটের যে টান টান অবস্থা থাকে, সেটাকেই বলা হয় পেদা টিং টিং।

কোথায় থাকবেন[সম্পাদনা]

  • সার্কিট হাউজ, ভেদভেদী, আমানতবাগ, রাঙ্গামাটি, ০৩৫১-৬২০১২জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • বন বিভাগ রেস্ট হাউজ, বনরূপা, রাঙ্গামাটি, ০৩৫১-৬৩৩৫১জুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • এলজিইডি রেস্ট হাউজ, টিএন্ডটি এলাকায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের পাশে, ০৩৫১-৬৩১৪৮এলজিইডি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • উসাই রেস্ট হাউজ, ভেদভেদী, আমানতবাগ, রাঙ্গামাটি, ০৩৫১-৬৩৩৮৯উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • জেলা পরিষদ রেস্ট হাউজ, পাবলিক হেলথ এলাকায়, ০৩৫১-৬৩২৬২রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • কৃষি বিভাগ রেস্ট হাউজ, ট্রাইবেল আদাম, বনরূপা, ০৩৫১-৬২৩২৪কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড রেস্ট হাউজ, চম্পকনগর, রাঙ্গামাটি, ০৩৫১-৬২২৮৮বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • বিসিক রেস্ট হাউজ, রাঙ্গামাটি স্টেডিয়াম এলাকায়, ০৩৫১-৬২০৩৭ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, তবলছড়ির ডিয়ার পার্ক এলাকায়, ০৩৫১-৬৩১২৬বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রণাধীন।
  • হোটেল মাউন্টেন ভিউ, সিদ্ধি ভবন, পর্যটন সড়ক, রাঙ্গামাটি, ০১৫৫৩৪৪০৩২৪
  • হোটেল সুফিয়া, ফিসারী ঘাট, কাঁঠালতলী, রাঙ্গামাটি, ০১৫৫৩৪০৯১৪৯
  • হোটেল গ্রীন ক্যাসেল, রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি, ০১৭২৬৫১১৫৩২, ০১৮১৫৪৫৯১৪৬
  • মোটেল জজ, কলেজ গেইট, রাঙ্গামাটি, ০১৫৫৮৪৮০৭০১
  • হোটেল আল-মোবা, নতুন বাস স্টেশন, রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি, ০১৮১১৯১১১৫৮
  • হোটেল ডিগনিটি, কালিন্দীপুর, রাঙ্গামাটি
  • হোটেল শাপলা, নিউ কোর্ট বিল্ডিং রোড, রাঙ্গামাটি সদর, রাঙ্গামাটি, ০১৮১৯৬৩৬৯৫৫
  • হোটেল রাজু, নতুন বাস স্টেশন, রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি, ০১৮১১২৫৮৩০৫, ০১৮২০৩০৩৫৭৪
  • হোটেল ড্রিমল্যান্ড, নিউ কোর্ট বিল্ডিং রোড, রাঙ্গামাটি সদর, রাঙ্গামাটি

খাওয়া দাওয়া[সম্পাদনা]

রাঙ্গামাটি শহর এলাকার যে কোন মানের রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।