রুমা বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
জানুন
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ৪৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ২১°৫৩´ থেকে ২২°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°১৭´ থেকে ৯২°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত রুমা উপজেলার আয়তন ৪৯২.১০ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৭৬ সালে রুমা থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে।
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রুমা উপজেলার জনসংখ্যা ৩০,২০৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬,০৬২ জন এবং মহিলা ১৪,১৪৭ জন। মোট জনসংখ্যার ৬.৮২% মুসলিম, ১.৫৬% হিন্দু, ৪৪.৬৮% বৌদ্ধ, ৩৭.২৭% খ্রিস্টান এবং ৯.৬৭% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ উপজেলায় মার্মা, চাকমা, ত্রিপুরা সহ মোট ১১ উপজাতি নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে রুমা যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম-বান্দরবান মহাসড়ক হয়ে বান্দরবান যেতে হবে। এরপর বান্দরবান সদর থেকে সরাসরি বাস বা চাঁদের গাড়ি যোগে রুমা যেতে পারেন।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- 1 কেওক্রাডং (বান্দরবান জেলার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত।)। বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এক সময় এটিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ধরা হত।
- 2 বগাকাইন হ্রদ (বগালেক) (রুমা উপজেলার পূর্ব দিকে সাঙ্গু নদীর তীর থেকে ২৯ কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত নাইতং মৌজার পলিতাই পর্বতশ্রেণীর অন্তর্গত একটি পাহাড়ের চূড়ায় হ্রদটি অবস্থিত।)। এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার স্বাদু পানির একটি হ্রদ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২,৪০০ ফুট (কেওক্রাডং-এর উচ্চতা ৩,১৭২ ফুট)। ফানেল বা চোঙা আকৃতির আরেকটি ছোট পাহাড়ের চূড়ায় বগা হ্রদের অদ্ভুত গঠন অনেকটা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের মতো।
- 3 তাজিংডং (বিজয়) (রুমা উপজেলার রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের সাইচল পর্বতসারিতে অবস্থিত।)। সরকারিভাবে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। সরকারি হিসেবে তাজিংডং পর্বতের উচ্চতা ১,২৮০ মিটার (৪১৯৮.৪ ফুট)।
- 4 ঋজুক জলপ্রপাত (রুমা উপজেলা থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে পান্তলা মৌজায় অবস্থিত। প্রায় ৩০০ ফুট উচ্চতা হতে জলধারা সাঙ্গু নদীতে প্রবাহিত হয়।)। শীতল পানির এই জলপ্রপাতে সারা বছর পানি থাকে। তবে, জুলাই- আগস্ট মাসে জলপ্রবাহ সব থেকে বেশি থাকে।
- 5 চিংড়ি ঝর্ণা। বগালেক থেকে ট্রেক করে এগিয়ে যেয়ে, দার্জিলিংপাড়া হয়ে বাংলাদেশের অন্যতম উচ্চতম শৃঙ্গ কেওক্রাডং এর পথে ঘণ্টাখানেকের পাহাড়ি পথ হাঁটলে চিংড়ি ঝর্ণাধারা দেখা যায়। নিচ থেকে ঝর্ণার ছোট একটি অংশ দেখা যায়। মূল ঝর্ণা দেখতে হলে বিশালাকারে পিচ্ছিল পাথরগুলো পার হয়ে ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে হবে।
- লুং ফের ভা সাইতার। বগালেক থেকে ট্রেক করে এগিয়ে যেয়ে, দার্জিলিংপাড়া হয়ে বাংলাদেশের অন্যতম উচ্চতম শৃঙ্গ কেওক্রাডংয়ে যাওয়া যায়। কেওক্রাডং পেরিয়ে থাইকং পাড়া, থিংদৌলতে পাড়া, সিলোপি পাড়া হয়ে লুং ফের ভা সাইতারে পৌঁছানো যাবে।
- পাসিংপাড়া। এটি বাংলাদেশের সব থেকে উঁচু গ্রাম। পাসিংপাড়ার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার সাতশ’ ফুট। পাড়ার বাসিন্দারা মূলত মুরং সম্প্রদায়ের। প্রচলিত মতে পাড়া প্রধান বা কারবারি পাসিং ম্রো- এর নামে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘পাসিংপাড়া’।
- ত্লাবং ঝর্ণা (দ্বৈত ঝর্ণা) (থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত)। এটি জোড়া বা ক্লিবুং খাম নামেও পরিচিত। পাথুরে খাল রেমাক্রির উৎপত্তি এই ঝরনা থেকেই। ত্লাবং একটি বম শব্দ। এর অর্থ “পানি ধরে রাখার বেসিন বা গর্ত”।
থাকার ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]রুমায় রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল হিলটন উল্লেখযোগ্য। এছাড়া আছে সরকারী মায়াকুঞ্জ রেস্ট হাউজ। আরো আছে মায়াটান হোটেল।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]রুমা উপজেলা সদরে স্বল্পপরিসরে কয়েকটি খাবার হোটেল রয়েছে। খাবার হোটেল গুলো মাঝারি মানের। খুব বেশি কিছু আশা করা ভুল হবে।