উইকিভ্রমণ থেকে

গাইবান্ধা জেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক এলাকা, যা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের অন্তর্গত। ২৫°০২´ উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৫°৩৯´ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ হতে ৮৯°৪৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে বিস্তৃত ২,১৭৯.২৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই জেলার উত্তরে কুড়িগ্রামরংপুর জেলা, দক্ষিণে বগুড়া জেলা, পূর্বে জামালপুরকুড়িগ্রাম জেলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ এবং পশ্চিমে দিনাজপুর, জয়পুরহাটরংপুর জেলা অবস্থিত। গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, ফুলছড়ি, সাঘাটা, সাদুল্লাপুরসুন্দরগঞ্জ - এই সাতটি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত জেলাটি রাজধানী ঢাকা থেকে ২৬৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

প্রবেশ[সম্পাদনা]

আকাশ পথে[সম্পাদনা]

গাইবান্ধায় কোনো বিমানবন্দর না-থাকায় এখানে সরাসরি আকাশ পথে আসা যায় না, তবে ঢাকা থেকে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সাথে; ঢাকা থেকে সৈয়দপুর এসে সেখান থেকে সড়কপথে গাইবান্ধায় আসা যায়। বাংলাদেশ বিমান, জেট এয়ার, নোভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার - প্রভৃতি বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা রয়েছে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর আসার জন্য।

বাংলাদেশ বিমানের একটি করে ফ্লাইট সপ্তাহে ৪ দিন ঢাকা-সৈয়দপুর ও সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে; ভাড়া লাগবে একপথে ৩,০০০/- এবং রিটার্ণ টিকিট ৬,০০০/-। সময়সূচী হলোঃ

  • ঢাকা হতে সৈয়দপুর - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০২ টা ২০ মিনিট;
  • সৈয়দপুর হতে ঢাকা - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০৩ টা ৩৫ মিনিট।

এই সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:

  • ম্যানেজার, সৈয়দপুর বিমান বন্দর, মোবাইল - +৮৮০১৫৫৬-৩৮৩ ৩৪৯।

স্থলপথে[সম্পাদনা]

সড়ক পথে ঢাকা হতে গাইবান্ধার দূরত্ব ২৭০ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে গাইবান্ধা রেল স্টেশনের দূরত্ব ৪৮০ কিলোমিটার। জেলাটি বিভাগীয় শহর রংপুর হতে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

রেলপথ[সম্পাদনা]

অনেক পূর্ব হতেই গাইবান্ধা জেলায় রেলপথ রয়েছে; এই জেলায় রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৫৬ কিলোমিটার (প্রায় ৫২ মাইল)। গাইবান্ধা জেলার রেলস্টেশনগুলি হচ্ছে - বামনডাঙ্গা, নলডাঙ্গা, কামারপাড়া, কুপতলা, গাইবান্ধা, ত্রিমোহিনী, বালাসীঘাট রেলওয়ে ফেরী স্টেশন, বাদিয়াখালী, বোনারপাড়া জংশন, মহিমাগঞ্জ, ভরতখালী, ফুলছড়ি, তিস্তামুখ ঘাট রেলওয়ে স্টেশন।

ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে সরাসরি গাইবান্ধায় আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন গাইবান্ধার পথে যাতায়ত করে। ঢাকা – গাইবান্ধা রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো হলোঃ

  • ৭৭১ রংপুর এক্সপ্রেস (রবিবার বন্ধ) - রংপুর হতে রাত ০৮ টায় ছাড়ে ও ঢাকায় ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে পৌছে এবং ঢাকা থেকে সকাল ০৯ টায় ছাড়ে ও রংপুরে সন্ধ্যা ৭টায় পৌছে;
  • লালমনি এক্সপ্রেস (শুক্রবার বন্ধ) - ঢাকা থেকে রাত ১০ টা ১০ মিনিটে ছাড়ে।

ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে চলাচলকারী রেলে ঢাকা হতে গাইবান্ধা আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলো -

  • শোভন চেয়ার - ৫১৫ টাকা;
  • স্নিগ্ধা (এসি চেয়ার) - ৯৮৪ টাকা।

ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:

  • কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৯৩৫৮৬৩৪,৮৩১৫৮৫৭, ৯৩৩১৮২২, মোবাইল নম্বর: +৮৮০১৭১১৬৯১৬১২;
  • বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৮৯২৪২৩৯;
  • ওয়েবসাইট: www.railway.gov.bd।

সড়কপথ[সম্পাদনা]

ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, আসাদগেট, শ্যামলী, মহাখালী, মিরপুর, আব্দুল্লাহপুর বাস স্টেশন থেকে গাইবান্ধা আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৬.৩০ হতে ৮.০০ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে শাহ ফতেহ আলী, নাবিল, এস আর ট্র্যাভেলস প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানীর বাস আছে প্রতিদিন।

  • নাবিল পরিবহন, ঢাকা: ☎ ০২-৯০০ ৭০৩৬, ৯০১ ৩৬৮২, ৮১২ ৭৯৪৯, মোবাইল: +৮৮০১৭১৪-৮২৭ ৩৭৩ (আসাদগেট);
  • হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা: ☎ ০২-৯১৪ ৪৪৮২, ৮০১ ১৭৫০, ৯০০ ৩৩৮০, ৮১১ ৯৯০১, মোবাইল: ০১১৯৮-২২০ ০৫২ (শ্যামলী), ০১১৯০-১৮৮ ১৬৯ (গাবতলি);
  • এস আর ট্র্যাভেলস, ঢাকা: মোবাইল: +৮৮০১৭১১-৩৯৪ ৮০১ (গাবতলি), +৮৮০১৫৫২-৩১৫ ৩১৮ (উত্তরা);
  • শাহ ফতেহ আলী এক্সপ্রেস, ঢাকা: মোবাইল: ০১১৯৩-২২১ ০৮৫ (মহাখালি), ০১১৯৩-২২১ ০৮৪ (উত্তরা);
  • আল হামরা ট্র্যাভেলস, ঢাকা: মোবাইল: +৮৮০১৭২১-৮০২ ০৩১ (গাবতলি)।
  • ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
    • এসি বাসে - ১,০০০/-
    • নন-এসি বাসে - ৭৫০/-

জলপথে[সম্পাদনা]

অপ্রচলিত মাধ্যম হিসাবে নৌপথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে; তবে কেবলমাত্র স্থানীয় পর্যায় ছাড়া অন্য কোনো এলাকার সাথে, কিংবা ঢাকা থেকে বা অন্যান্য বড় শহর হতে সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না। তবে, চরাঞ্চলে যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌযান।

দেখুন[সম্পাদনা]

মানচিত্র
গাইবান্ধার মানচিত্র
  • 1 বর্ধনকুঠি, গোবিন্দগঞ্জ উইকিপিডিয়ায় বর্ধন কুঠি (Q31724975)
  • বিরাট রাজার ঢিবি, গোবিন্দগঞ্জ উইকিপিডিয়ায় বিরাট রাজার ঢিবি (Q27044945)
  • 2 ভরতখালী কাষ্ঠ কালী মন্দির উইকিপিডিয়ায় ভরতখালী কাষ্ঠ কালী মন্দির (Q16346281)
  • মহিমাগঞ্জ চিনিকল;
  • শিবরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় - সুন্দরগঞ্জ;
  • ভবানীগঞ্জ পোষ্ট অফিস - ফুলছড়ি;
  • বালাসীঘাট - ফুলছড়ি;
  • ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার - ফুলছড়ি;
  • পৌরপার্ক - গাইবান্ধা;
  • এসকেএস ইন - গাইবান্ধা;
  • মাস্তা মসজিদ - গোবিন্দগঞ্জ;
  • 3 রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড, গোবিন্দগঞ্জ (রংপুর চিনি কল লিমিটেড)। গাইবান্ধা জেলায় অবস্থিত একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। ৩৫ একর জমি নিয়ে ১৯৫৪ সালে কাজ শুরু করে মহিমাগঞ্জ রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড নামে একটি চিনিকল স্থাপনার কাজ সমাপ্ত হয় ১৯৫৭ সালে।১৯৫৭-১৯৫৮ মৌসুম হতেই চিনি উৎপাদন শুরু হয়। স্বাধীনতা লাভের পর, ১৯৭২সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে।
    গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হতে অটো, সিএজি বা বাস যোগে যাওয়া যায়। সিএনজি তে গেলে দ্রুত সময়ে পৌঁছানো যাবে। গোবিন্দগঞ্জ থেকে মহিমাগঞ্জ এর সিএনজি ভাড়া ২৫ টাকা, দূরত্ব ১২ কি.মি., সময় লাগবে ২০-২৫ মিনিট। এছড়া ট্রেনে আসলে মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে নামতে হবে। স্টেশন থেকে অটো রিক্সা বা ভ্যানে করে যেতে হবে, ভাড়া ৫ টাকা।
  • নলডাঙ্গা জমিদার বাড়ী উইকিপিডিয়ায় নলডাঙ্গা জমিদার বাড়ি, গাইবান্ধা (Q113375675)
  • বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ী উইকিপিডিয়ায় বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ি (Q97383843)
  • শাহ্ সুলতান গাজীর মসজিদ - মীরের বাগান;

স্থাপত্য[সম্পাদনা]

  • জামালপুর শাহী মসজিদ, সাদুল্লাপুর (সাদুল্লপুর উপজলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্স থেকে রিক্সা/সিএনজি যোগে ৪নং জামালপুর ইউনিয়নস্থ পচার বাজারে আসা যায়।)। লোকমুখে শোনা যায় ৯৩০ সালে পারস্য থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এসে শাহজামাল এই মসজিদটি নির্মআণ করেন।
  • শাহসুলতান গাজীর মসজিদ (গাইবান্ধা জেলা বাসস্ট্যান্ড হতে অটোরিক্সা, রিক্সা অথবা সি.এন.জি. যোগে যাওয়া যায়)। মসজিদ গাত্রের শিলা লিপি থেকে পাওয়া তথ্য মতে ১৩০৮ইং সালে সৈয়দ ওয়াজেদ আলী নামক এক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এ মসজিদ আবিষ্কার করে সংস্কার করেন। পরবর্তীতে শাহ্ সুলতান নামক এক ধর্মযোদ্ধার নাম এর সাথে জড়িয়ে যায়। তাঁর নামেই এ মসজিদ পরিচিতি পায়। এছাড়াও এই মসজিদের পাশেই শাহ্ সুলতান গাজীর মাজার অবস্থিত।

আহার[সম্পাদনা]

‘সিদল ভর্তা’ এখানকার জনপ্রিয় খাবার, যা কয়েক ধরনের শুঁটকির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে বেটে তৈরি করা হয়। এছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত “হাড়িভাঙ্গা” আম, তামাক ও আখ। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।

রাত্রিযাপন[সম্পাদনা]

গাইবান্ধায় থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্য উন্নতমানের আবাসন সুবিধা পাওয়া যায় -

পরবর্তী ভ্রমণ[সম্পাদনা]